সোনা চান্দের ডায়েরী
১.০
বুধবার কাছুকান্দি বাজার বসে । সপ্তাহের দুই দিন হাট বসে! বুধবার আর শনিবার। ছেদু মিয়া মুড়ালি আর সন্দেশ বানায়। ৪৫ বছর ধরে প্রতি বুধবার আর শনিবার সে মুড়ালি আর সন্দেশ বিক্রি করে কাছুকান্দি বাজারে। পুরো সপ্তাহ ধরে তার এ আয়োজন চলে বাজার ধরার জন্য। এই দুই দিনে যা বিক্রি হয়, তা দিয়েই কোন মতে দিন চলে ছেদু মিয়ার। তিনকুলে ছেদুর মিয়ার কেউ নেই। অথচ তার কোন অভিযোগ নেই। নীরবে নিভৃতে চলে যাচ্ছে দিন!
ছেদু মিয়ার পাশেই একটা ঘরে থাকে সোনাচান! সোনা চান্দের বয়স ৭৩। ২৪ বছর বয়সে বাড়ি থেকে রাগ করে চলে এসেছেন সোনাচান। অথচ দেখে বুঝার উপায় নেই, লোকটা এতো অভিমানী!
ছেদু মিয়ার যেমন কেউ নেই, সোনা চান্দের থেকেও নেই! দিন শেষে দুজনেই একা!
২.০
সোনা চান্দের বেঁচা বিক্রি ভাল যাচ্ছে না! মানুষের হাত খালি, এখন আর আগের মতো লাভও হয় না। কাঁচা মালের দাম বেড়েছে অথচ সোনা চাঁন কখনো বাতাসার দাম বাড়ায় নি। হয়তো লাভ কম হয়েছে কিন্তু কোন প্রতারনা করেনি!
গত বুধবার, কাছুকান্দি বাজারে বেদে মেয়েরা টাকা তুলতেছিল। সোনা চান্দের কাছে একজন বেদে মেয়ে টাকা চায়লে সোনা চাঁন জিজ্ঞেস করলেন,
" কী জন্যি টেহা উডাইতাছেন?
__ আমার নাতনির বিয়া গো বাজান! যা পারেন দেন।
" বিয়ে দিতে খরচ কত লাগে?"
__ গরিবের সাদি, কত আর লাগবো? ২০ হাজার টেহার মতো লাগিবো। হেরা মেমান আইবো ১৮ জন, জামাই সহ ১৯ জন।
" এই নেও ৫০০ টেহা!
__ এতো টেহা!
" হ বেডি, আমার লাগি একটু দোয়া কইরো ! আমার ঘরে থাইক্কা করুনাময় মালিকের দেখা পাওয়া দায়!
__মালিকের দেখা গরিবেরা পায় না গো বাজান, মালিক মিলে বড় লোহের আঙ্গিনায় !